লিওনেল মেসির জীবন কাহিনী - লিওনেল মেসি

আজকের আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো পৃথিবীর জনপ্রিয় ফুটবলার লিওনেল মেসি এর জীবন কাহিনী এর উপর। আপনারা অনেকেই আছেন যারা লিওনেল মেসি কে চিনেন তবে তার সম্পূর্ণ জীবন কাহিনী জানেন না। তাই তার সম্পূর্ণ জীবন কাহিনী জানতে চাইলে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
                                         
লিওনেল মেসি

মেসির জীবন কাহিনী

শুনে নিন লিওনেল মেসির জীবন কাহিনী.. "আমাকে কেউ খেলায় নিত না" -- লিওনেল মেসি আমার জন্ম রোজারিও শহরে। এই শহরটি আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর। আমরা এই শহরের উত্তর দিকের ব্যারিও লাস হেরাসে খুব সাধারণ কিন্তু সুন্দর একটি বাড়িতে বাস করি। আমার থেকে বয়সে বড় পাঁচ ভাই আর কাজিনদের সঙ্গে আমি ছোটবেলায় খেলতাম। আমার এখনো মনে পড়ে, আমাদের ছেলেদের সেই ছোট দলটি প্রতি সপ্তাহের শেষে নিয়ম করে ফুটবল খেলত।

আমি (মেসি) অনেক ছোটবেলায় প্রথম ফুটবল উপহার পেয়েছিলাম। তখন আমি (মেসি) অনেক ছোট; আমার বয়স মনে হয় তিন কিংবা চার হবে। সেটি আমার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার ছিল। তার পর থেকে ক্রিসমাস হোক আর জন্মদিনই হোক না কেন, আমি সব সময়ই একটি উপহার চাইতাম সবার কাছে; সেটি হলো ফুটবল। আমি আমার উপহারগুলো জমিয়ে রাখতাম। আমি ফুটবল নিয়ে রাস্তায় খেলতে যেতাম না। যদি ফুটবল ফেটে যায় বা ফুটবলের গায়ে ময়লা পড়ে; এই ভয় ছিল আমার। মাঝেমধ্যে বল নিয়ে মাঠে যেতাম, তখন থেকেই আমি ফুটবলের প্রেমে পড়ি।

আমাদের বাড়ির চারপাশে সবুজ উদ্যান ছিল। কিন্তু ফুটবল খেলার জন্য কোনো মাঠ ছিল না। আমাদের বাড়ি থেকে খুব কাছেই একটি পরিত্যক্ত সামরিক ক্যাম্প ছিল, যেটি আমাদের কাছে ব্যাটালন নামেই পরিচিত ছিল। সেই ক্যাম্পে বেশ কটি বড় সবুজ ঘাসের উদ্যান ছিল। আমরা তারের বেড়া ডিঙিয়ে চুপি চুপি চোরের মতো সেই ক্যাম্পে চলে যেতাম। তারপর সারা দিন ফুটবল নিয়েই পড়ে থাকতাম। আমরা বেশির ভাগ সময়ই রাস্তায় ফুটবল খেলতাম। বাড়ির বাইরে যেখানেই সুযোগ পেতাম, সেখানেই আমরা ফুটবল খেলতাম। যদিও সে সময় রাস্তাঘাট এবড়োখেবড়ো ছিল। আমরা খুব ছোট একটি পরিবেশের মধ্যে থাকতাম।

যার কারণে সেখানে আমরা একে অন্যকে বেশ ভালোভাবেই চিনতাম। আমরা বাড়ির সামনেই ফুটবল খেলতাম বলে আমার মা আমাকে নিয়ে তেমন চিন্তা করতেন না। আমি পাঁচ বছর বয়স থেকে ফুটবল খেলা শুরু করি। প্রথম দিকে আমি বড়দের সঙ্গে খেলার অনুমতি পেতাম না। এটা আমার জন্য ছিল সত্যিই হতাশার। আমার পাড়ার বড় ভাইয়েরা আমাকে রাস্তার সেই ফুটবল ম্যাচে নিতে চাইত না। আমি ছোট ছিলাম বলেই তারা আমাকে নিত না, ব্যাপারটা আসলে এ রকম ছিল না।

বড় ভাইয়েরা বলত, তারা নাকি শুধু বড়দের সঙ্গেই ফুটবল ম্যাচ খেলতে চায়। আমার বড় ভাই আমাকে নিয়ে বেশ চিন্তা করতেন। আমার কাছ থেকে অন্য ছেলেরা যখন বল নিতে পারত না, তখন যদি সেই ছেলেরা রেগে গিয়ে আমাকে মারধর করে। এই নিয়েই ছিল তাদের যত দুশ্চিন্তা। আমি যখন রাস্তায় ফুটবল খেলা শুরু করি, তখনই আমি আমাদের এলাকার ছোট ফুটবল ক্লাব গ্র্যান্ডোলিতে যোগ দিই।

শুধুই আমি (মেসি) না, আমাদের পুরো পরিবার সেই ক্লাবে খেলত। মা ছাড়া বাসার সবাই বয়স অনুসারে সেই ক্লাবে খেলতাম আমরা। আমার বাবা তো সেই ক্লাবের কোচদের একজন ছিলেন। আমরা প্রতি রোববার সারা দিন ক্লাবের মাঠে দৌড়াদৌড়ি করতাম। ক্লাবে যোগদানের শুরু থেকেই আমরা সেভেন-অ্যা সাইডের ম্যাচ খেলতাম। আমাদের শহরের উত্তর অংশের দল রোজারিওর ছোট দলের বিপক্ষে আমরা নিয়মিত খেলতাম।

আমি (মেসি) আমার দাদির জন্য প্রথম সেই বড়দের ম্যাচে খেলার সুযোগ পাই। গ্র্যান্ডোলি ক্লাবে আমার বয়সী ছোট ছেলেদের নিয়ে ফুটবল দল ছিল না। এক রোববার আমার থেকে একটু বয়সে বড় দলের এক খেলোয়াড় খেলার জন্য প্রস্তুত ছিল না। আমার দাদিমা আমাকে জোর করে সেই ম্যাচে খেলতে নামিয়ে দেয়। তার পীড়াপীড়িতে আমি মাঠে নামি। আমাদের কোচ আমাকে মাঠে নামাতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আমাকে পুরো খেলা খেলতে দিয়েছিলেন। সেটাই ছিল আমার বড়দের সঙ্গে খেলা প্রথম ক্লাব ম্যাচ।

আমি (মেসি) যখন আমার বয়সী খেলোয়াড়দের সঙ্গে মাঠে নামতাম, তখন আমাদের কোচিং করাতেন স্বয়ং আমার বাবা। আমি প্রতিদিন ঘণ্টা ধরে মাঠে ফুটবল প্র্যাকটিস করতাম। আমি প্রতিদিন স্কুলে যেতাম। কিন্তু স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই সোজা ফুটবল নিয়ে দৌড় দিতাম। কিছু একটা মুখে পুরেই আমি রাস্তায় দৌড় দিতাম। আমি সব সময় রাস্তায় ফুটবল খেলার জন্য মুখিয়ে থাকতাম। প্রায় সব সময় আমার সঙ্গে একটি বল রাখতাম।

বার্সেলোনায় আসার পরেই আমার সব বদলে যায়। আমি আমার সব বন্ধু, পরিবার আর আমার দেশ থেকে দূরে চলে আসি। আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই আমি স্পেনে পাড়ি জমাই। আমি মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকে বার্সেলোনার যুব দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস শুরু করি। আমি সৌভাগ্যবান যে আমি একটি সাধারণ পরিবারে জন্মেছি। কিন্তু স্রষ্টার কৃপায় আমাদের তেমন কিছুর অভাব ছিল না। আমার বাবা সারা দিন পরিশ্রম করে আমাদের জন্য সবকিছু নিয়ে আসতেন।

আমাদের তিন ভাইয়ের যা যা লাগে তা আমার বাবাই নিয়ে আসেন। আমি (মেসি) কখনোই কোনো কিছুর অভাব বোধ করিনি। যখন ছোট ছিলাম তখন আমার বাবা ও চাচা সব সময় বিশ্বাস করতেন আমি নাকি বড় ফুটবলার হব। এটা সত্যি হতে শুরু করে যখন আমি বার্সেলোনার উদ্দেশে রওনা দিই। আমি যখন রোজারিওতে বয়স্ক দলের সঙ্গে প্রথম প্র্যাকটিস করি তখন আমার কোচ বার্সেলোনা যাওয়ার জন্য সব ব্যবস্থা করেন। তিনি তখন তাঁর মনের প্রশান্তির জন্য আমার জন্য একটি চুক্তিপত্র রেডি করেন ন্যাপকিনের ওপর লেখা সেই চুক্তিপত্রে আমি স্বাক্ষর করি।

প্রথম প্রথম বার্সেলোনায় এসে অনেক মন খারাপ করতাম। আমা একা একা লাগত। কান্নাকাটি করতাম। কিন্তু আমি তো স্বেচ্ছায় আমার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমার স্বপ্ন ছিল বার্সেলোনার প্রধান দলের হয়ে ফুটবল খেলা। আমি (মেসি) শিশুদের বলব যে, তোমরা ফুটবল খেলাকে উপভোগ করার জন্য খেলো করো।

মেসির ধর্ম কি 

ক্যাথলিক খ্রিস্টান ।সে ধর্ম বিষয়ে তেমন বলে না তবে ব্যাক্তিগত জীবনে মোটামুটি ধার্মিক বলেই মনে হয় ।এটা কোরা তে প্রশ্ন না করে গুগল করলেই পারতেন

মেসির রেকর্ড

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবলার আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি। ক্লাব পর্যায়ে মেসি ও বার্সেলোনা আজ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তিনি ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে মেসি তাঁর প্রথম ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জয়লাভ করেন। ইতিমধ্যে মেসি প্রথম ফুটবলার হিসেবে আটবার ব্যালন ডি’অর পুরস্কার লাভ করেছেন। বার্সেলোনার হয়ে তিনি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩০০তম গোল করেন। মেসি এখন পর্যন্ত (২০১৩ সালের ১ই জুলাই ) বার্সেলোনার হয়ে ৩১৩টি গোল করেন ৩৭৯ ম্যাচে এবং জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে ৯০ ম্যাচে ৩৬ গোল করেছেন।

মেসির মোট গোল কত

এখন পর্যন্ত ১৭৮টি আন্তর্জাতিক খেলায় ১০৬টি গোল।

আমাদের শেষ কথা

আজকের আমাদের এই পোষ্টের মূল বিষয় ছিল বিশ্ব বিখ্যাত ফুটবলার ল লিওনাল মেসির জীবন কাহিনী নিয়ে। আমরা ইতিমধ্যেই আপনাদের সাথে লিওনেল মেসের জীবন কাহিনী শেয়ার করেছি। আশা করি আপনাদের পোস্টটি ভালো লেগেছে এবং এই পোস্টটি শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকুন...তাতে আমরা আপনাদের ভাল পোষ্ট দেয়ার আগ্রহ জন্মে..! এর পর আপনাদের কাছে নিয়ে আসবো নেইমারের জীবন কাহিনী....কেমন লাগছে পোষ্ট টি পড়ে নিশ্চই জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url