গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাব - গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

প্রিয় পাঠকগন এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় হলো গ্রামীণ ব্যাংকের সকল সুযোগ সুবিধা এবং গ্রামীণ ব্যাংকের যত কর্মচারী আছে তাদের বেতন এবং তাদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা. যদি আপনি গ্রামীণ ব্যাংকের সকল সুযোগ সুবিধা এবং তথ্য না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন.
                                                                    
গ্রামীণ ব্যাংক

ভুমিকা

বাংলাদেশ অনেক ব্যাংক রয়েছে. তবে গ্রামীণ ব্যাংক তাদের মধ্যে সবথেকে পরিচিত এবং অন্যতম একটি ব্যাংক. তাছাড়া এই ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ এর হার ও অনেকটা সন্তুষ্টি জনক। কারণ এই ব্যাংকের ঋণ পরিষদের হার ৯৮ শতাংশ। তাছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের যে সকল সদস্য রয়েছে তারা অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। আর যারা গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য নয় তবুও তারা কিছু ঋণ, লোন অথবা কিছু সুযোগ সুবিধা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে পেয়ে থাকে। আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের সেগুলোই জানানোর চেষ্টা করব। আপনি এ সকল বিষয় না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি পড়ুন, আপনি গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। তো চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক গ্রামীণ ব্যাংকের সকল তথ্য।

গ্রামীণ ব্যাংক কি?

গ্রামীণ ব্যাংক হল বাংলাদেশে অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র ঋণ দাতা সংস্থা . গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হলেন ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস. যিনি আই ব্যাংক টি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন. তারপর ১৯৮৩ সালে এই ব্যাংকটি বৈধ এবং স্বতন্ত্র ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করে.

গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান

বর্তমানে যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন তিনি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্থাৎ আইবিএ এর অধ্যাপক ড, একে এম সাইফুল মজিদ.

গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান প্রধান কে?

গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান প্রধান ব্যক্তি হলেন মোঃ মোসলেহ উদ্দিন.

গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি

গ্রামীণ ব্যাংক স্বায়ত্তশাসিত একটি ব্যাংক হলেও বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে রয়েছে.ব্যাংকটির মালিকানা তার ঋণগ্রহীতাদের, যারা এর ৯৭% শেয়ার ধারণ করে, বাকি ৩% সরকারের হাতে।

বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক কয়টি

মূলত বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক এর সংখ্যা হল ছয়টি. নিচে ব্যাংক গুলির নাম উল্লেখ করা হলোঃ
  1. অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
  2. সোনালী ব্যাংক লিমিডেট
  3. জনতা ব্যাংক লিমিটেড
  4. বেসিক ব্যাংক লিমিটেড
  5. বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল)
  6. রূপালী ব্যাংক লিমিটেড

গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত

গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তারপর ১৯৮৩ সালে এটি বৈধ এবং স্বতন্ত্র ব্যাংক হিসেবে নিজের যাত্রা শুরু করে। এই ব্যাংকে মূলত দরিদ্র এবং ভূমিহীন নারীদের পাঁচ জনের ছোট ছোট দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে এবং এই ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের ও ব্যবস্থা করে দেয়। গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান ঋণ পরিশোধের হার ৯৮%।

গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

গ্রামীণ ব্যাংক তাদের কিছু সদস্য এবং যারা সদস্য নয় তাদেরও বিভিন্ন সেবা বা ঋণ এবং তাদের বিভিন্ন চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে থাকে। এখন আমরা জেনে নিব গ্রামীণ ব্যাংকের কিছু প্রদান সুযোগ-সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্য।

মৌলিক ঋণ

এটি হলো গ্রামীণ ব্যাংকের একদম প্রাথমিক পর্যায়ের একটি ঋণ ব্যবস্থা। এটি হলো গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন সদস্যদের স্টার্টার মূলধন। হতে পারে ১০০০০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত তবে গ্রামীণ ব্যাংক এই ঋণটি তাদের সদস্যদের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে দিয়ে থাকে। এই দিনের সুদের হার হল ২০ শতাংশ। আপনি চাইলে গ্রামীণ ব্যাংকের এই ঋণটি এক বছর মেয়াদে সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।

পশুসম্পদ ঋণ

এই দিনটি মূলত গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা তাদের নিজস্ব গবাদি পশুর মোটাতাজাকরণ অথবা নতুন গবাদি পশু কেনার জন্য নিয়ে থাকে। পরিমাণ ১০০০০ টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর এই ঋন এর সুদের হার বার্ষিক ২০%। গ্রামীণ ব্যাংকের এই দিনটি আপনি চাইলে এক বছর মেয়াদী ভাবে সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন। আপনি চাইলে এই ঋনটি ব্যবহার করতে পারেন কিছু গবাদি পশু গবাদি পশু যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি পশু কেনার জন্য।

ফসল ঋন

ফসল ঋণ বা শস্য ঋন মূলত স্বল্প মেয়াদী বিনিয়োগের জন্য দেয়া হয়ে থাকে এবং সাধারণত মৌসুমি ফসলের জন্য এই ঋণ প্রদান করা হয়। এই ঋন এর পরিমাণ হতে পারে পাঁচ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত। গ্রামীণ ব্যাংকের এই ঋনের বার্ষিক সুদের হার ২০ %। আপনি চাইলে এই ঋনটি এক বছর মেয়াদী সাপ্তাহিক কিস্তিতে পূরণ করতে পারবেন বা পরিশোধ করতে পারবেন।

মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ঋণ

যেসব সদস্য খুব দ্রুত সময়ে প্রথম পর্যায়ে ঋণ অর্থাৎ মৌলিক ঋণ পরিশোধ করে ফেলে তাদের জন্য এই দিনটি বরাদ্দ থাকে। আর এই ঋণকেই বলা হয় মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ঋণ। এই দিনটি মূলত ব্যবসার জন্য নেয়া থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকের এই ঋণটির পরিমাণ নির্ভর করে ব্যবসার আকার ও ধরণের উপর এবং এই ঋনের পরিমাণ হতে পারে ৩০ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই ঋনের বর্তমান বার্ষিক সুদ বিশ শতাংশ। আপনি চাইলে এই ঋনটি তিন বছর মেয়াদী সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারেন।

উচ্চশিক্ষার ঋণ

গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৯৭ সালে তাদের সকল সদস্যের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্য এই ঋনটি চালু করে। গ্রামীন ব্যাংকের কোন সদস্য চাইলে তার সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য এই দিনটি নিতে পারবে। এই ঋণের পরিমাণ হতে পারে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। এই ঋণের সুদের হার বার্ষিক ৫%। কোর্স শেষ হওয়ার পর চাকরি পেলে এই ঋনটি কিস্তির মাধ্যমে আপনি পরিশোধ করতে পারবেন। আপনি এই ঋণ টি নিয়ে বাংলাদেশ অথবা বিদেশের যে কোন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিসিন, আইন, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।

সেতু ঋণ

এই ঋণ দেয়া হয় সদস্যদেরকে আমানতের ভিত্তিতে। যারা উচ্চশিক্ষা ঋণের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু এখনো টাকা পাননি তাদেরকে এই ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ হয় ঋণ গ্রহীতার পরিশোধের ক্ষমতা এবং আমানতের ভিত্তিতে। এই ঋণের পরিমাণ হতে পারে ১০ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই ঋন এর বার্ষিক সুদ ৪%। এই ঋনটি ১ বছর মেয়াদী সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।

সঞ্চয় একাউন্ট

গ্রামীণ ব্যাংকের যে সকল সদস্য এবং যারা সদস্য নয় তারা গ্রামীণ ব্যাংকে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা জমা করে সঞ্চয় একাউন্ট খুলতে পারে। আরে অ্যাকাউন্টের সুবিধা হল অ্যাকাউন্টধারী যে কোন সময় যে কোন মুহূর্তে কোন ধরনের আগাম নোটিশ ছাড়াই তার একাউন্টের সকল টাকা উত্তোলন করতে পারবে। গ্রামীণ ব্যাংক এই সিস্টেমটা চালু করেছে মূলত তাদের সদস্য এবং যারা সদস্য নয় তাদের টাকা সঞ্চয়ের লক্ষ্যে।

গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেতন কত

গ্রামীণ ব্যাংকের বেতন কত এটি একটি কমন প্রশ্ন যার উত্তর হলঃ গ্রামীণ ব্যাংকের যদি কোন ব্যক্তি প্রথম এক বছরে প্রশিক্ষণকালীন অবস্থায় থাকে তাহলে তার বেতন হয় সাত হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার পর তার বেতন হয় ৮ হাজার টাকা এবং সে যদি প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ হয়ে কেন্দ্র ব্যবস্থা পদে যেতে পারে তাহলে ২০১৫ সালের কাঠামো অনুযায়ী তার বেতন ৯৭০০ টাকা থেকে ২৩৪৯০ টাকা স্কেল অনুযায়ী দেয়া হবে।

গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত

এখানে গ্রামীণ ব্যাংকের FD রেট নিচে দেখানো হলোঃ
                                                                
গ্রামীণ ব্যাংক
গ্রামীণ ব্যাংক



গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাব

আপনি চাইলে আপনার পেনশনের হিসাব নিজেই করতে পারবেন সেটা হোক না কেন গ্রামীণ ব্যাংকের অথবা বাংলাদেশের অন্যান্য চাকরির। আপনার যদি একটি নির্দিষ্ট নিয়ম জানা থাকে তাহলে আপনি নিজের পেনশনের হিসাব করতে পারবেন। মূলত বাংলাদেশের প্রতিটি চাকরির ক্ষেত্রে পেনশনের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া বা নিয়ম রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক এই নিয়মের বাইরে নয়। আর সে নিয়মটি হলঃসর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের ধার্যকৃত হার গুনণ (x)সর্বশেষ বেতন; ( ÷) ২ = মোট পেনশন এর টাকা।

শেষ কথা

গ্রামীণ ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম একটি ব্যাংক যার অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা এবং কার্য পদ্ধতির রয়েছে। আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি সেগুলোর মধ্যে আপনাদেরকে কিছু তথ্য জানানোর। যদি তথ্য গুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন যাতে আরো মানুষ এই পোস্ট সম্পর্কে জানতে পারে অর্থাৎ গ্রামীন ব্যাংক সম্পর্কে জানতে পারে। আর আপনার যদি মনে হয় আমরা গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে কোন ভুল তথ্য দিয়েছি তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আমাদেরকে সেই ভুল সম্পর্কে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url