টাইফয়েড - টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ - জেনে নিন বিস্তারিত
আমরা অনেকে আছি যারা নিজেরা টাইফইয়েড জ্বরের কবলে পড়েছি অথবা আমাদেরে কোন প্রিও জন এই জ্বরের কবলে পড়েছে। টাইফয়েড একধরনের বেক্টেরেয়া জাতীয় রোগ। এ রোগ এর কিছু লক্ষন রয়েছে জা দেখে আপ্নারা বুজতে পারবেন এই রোগ সম্পরকে।আমারা এইএ পোস্ট এর মাধ্যমে আপনাদেরকে টাইফায়েড এর সকল প্রকার লক্ষন, প্রতিকার,সমস্যা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানানো হবে।
ভুমিকা
বাংলাদেশের টাইফয়েড জ্বর একটি বহুল পরিচিত একটি রোগ। টাইফয়েড জ্বরহলো একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত রোগ, যা দূষিত খাবার পানির মাধ্যমে আমাদের দেহে জীবাণু ছড়ায়। এই ব্যাকটেরিয়া টি টাইফয়েড রোগে টাইফয়েড জ্বর আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের মধ্যে থাকে এবং দেহের দূষিত পানির মাধ্যমে রক্ত শোতে ছড়িয়ে পড়ে এর ফলে এই রোগের পাশাপাশি নানা ধরনের উপসর্গ দেখা যায় অর্থাৎ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
আজকে আমরা এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব - টাইফয়েড রোগের লক্ষণ, এই রোগ কেন হয় এবও এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে আপনার কি কি করতে পারেন। আশা করি আমাদের এই পোস্টটির সম্পন্ন পড়লে আপনি টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন।
টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ
দীর্ঘ সময়ের জ্বর এই জ্বর সাধারণত ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাথা ও শরীরে ব্যথা হতে পারে। বমি বমি ভাব । কাশি বা কফ । ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। খাওয়া-দাওয়ার অরুচি । শারীরিক দুর্বলতা। পেটে ব্যথা, পেটেও পিঠে দানা দেখা দিতে পারে।
টাইফয়েডের এন্টিবায়োটিক
প্রথমেই মনে রাখতে হবে টাইফয়েড জ্বর প্রাণঘাতী নয়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই জ্বর নিরাময় করা যায়। মুখে খাওয়া কিছু ওষুধ রয়েছে ,যেমন সেফিক্সিম এটি ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া অন্যান্য এন্টিবায়োটিক যেমন ছিপ্রোফ্লক্সাসিন,অ্যামক্সিসিলিন,ক্লোরাম্ফেনিকল ইত্যাদি ঔষধ গুলা টাইফয়েডের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় চিকিৎসায় এ রোগে মৃত্যুর হার 1% এ নেমে আসে অর্থাৎ যদি সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যায় তাহলে মৃত্যুর কোন সম্ভাবনা নাই বললেই চলে।
টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত
পাতি লেবু পুদিনা শরবত ডাবের জল টাটকা ফলের রস প্যাকেট বন্দি নয় বাটার মিল্ক অথবা দইয়ের ঘোল নিয়ম করে খেতে হবে তাছাড়া কোন কোন সময় ডিহাইডেশন হয়ে যেতে পারে। টাইফয়েড জ্বর হলে প্রচুর ঘাম হয় সেজন্য দেহ থেকে পানি বেরিয়ে আসে। তাই প্রচুর পরিমাণে খাবার জল খাওয়া দরকার।
টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে
সাধারণত চিকিৎসকগণ এন্টিবায়োটিক এর মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন যদি ডাক্তারের চিকিৎসা শুরু করা হয় তাও 5 দিন মতন সময় লাগে জ্বর কমতে যদি সঠিক সময়ে এবং টাইপের আক্রান্ত হওয়ার দ্রুত সময়ে চিকিৎসা না করা হয় তাহলে ওই জ্বর সপ্তম অথবা মাস ব্যাপী ও থাকতে পারে এছাড়া আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে সেজন্য টাইফয়েড জ্বরের কোন লক্ষণ দেখা গেলেই প্রথমেই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে এবং তাকে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। নিচে দেওয়া লিঙ্ক এর মাধ্যমে আপনারা টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে
টাইফয়েড জ্বর একটি ছোঁয়াতে রোগ। যদি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া যায় তাহলে এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে। এমনকি পানির মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বরের জীবাণু ছড়িয়ে থাকে। এই রোগের জটিলতা অত্যান্ত মারাত্মক এই রোগে সংক্রমিত হলে মেরুদন্ডের সংক্রমণ, অগ্নাশয় প্রদাহ, রক্ত ক্ষরণ এমনকি কিডনিতে বড় ধরনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই এই রোগে আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে একটি নিরাপদ দূরত্বে থাকাই ভালো এবং দূরত্বে থাকার মানে এই নয় যে তাকে অবহেলা করা। নিরাপত্তা বজায় রেখে টাইফয়েড জ্বরের আক্রান্ত রোগীর সেবা করতে হবে।
টাইফয়েড প্রতিকার
উপর থেকে আমরা টাইফয়েড জ্বরের বিভিন্ন লক্ষণ ওষুধের নাম টাইফয়েড জ্বর সোয়াসে কিছু আছে না এগুলো সম্পর্কে জানলাম। তবে সবথেকে জরুরী হলো টাইফয়েড জ্বরে এর প্রতিকার। প্রতিকার কথাটির অর্থ হচ্ছে, একটি সমস্যা হয়ে গেছে এখন সেই সমস্যা সমাধান করা। আর প্রতিরোধ বিষয়টি হচ্ছে সমস্যাটি হওয়ার আগেই তাকে রোধ করার চেষ্টা করো। যেহেতু আমরা প্রতিকার কথাটি উল্লেখ করছি,তার মানে টাইফয়েড হওয়ার পরে কিভাবে আমরা টাইফয়েড থেকে নিরাময় হব।
অর্থাৎ টাইফয়েড রোগকে দূর করব সেই বিষয়ে বলা হলোঃ টাইফয়েড জ্বরের আক্রান্ত রোগীর দেহে পানির ঘাটতি দেখা যায়। তাই রোগীর দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি এবং পুষ্টি পূরণ করতে হবে, প্রচুর পরিমাণে তরল পদার্থ এবং কালার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, অর্থাৎ সবুজ শাকসবজি ।জ্বর যদি বেশি থাকে তাহলে শরীর বারবার মুছে দেওয়া উত্তম। যদি ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা কোন ভ্যাকসিন অথবা টিকা থেকে থাকে তাহলে সেটা নিয়মিত নিতে হবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে নিজে থেকে কোন ঔষধ বা ভ্যাকসিন না নেওয়া ভালো এক্ষেত্রে পারদর্শী বা অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নেওয়া উত্তম। এখন ভ্যাকসিনের পাশাপাশি নিম্নলিখিত পদক্ষেপ সমূহ গ্রহন করা দরকার।
- প্রচুর পরিমাণে খাবার পানি খাওয়া।
- খাবারগ্রহণের আগে, খাবার খাওয়ার পরে, টয়লেট ব্যবহারের পর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
- ফলমূল শাকসবজি এবং রান্নার বাসনপত্র যথাসম্ভব পরিষ্কারভাবে ধুয়ে রাখতে হবে।
- খাবারগুলো যথাসম্ভব সিদ্ধ করে তারপর খেতে হবে।
- দূষিত পানি গ্রহণ করা পরিহার করতে হবে।
- বাইরের জাঙ্ক ফুড অথবা খোলামেলা জায়গায় রাখা তেলেভাজা খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে।
- টয়লেট সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে টাইফয়েডের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় হাতিয়ার হচ্ছে নিজে পরিষ্কার থাকা এবং আপনার চারিপাশ পরিস্কার রাখা। যে সমস্ত এলাকায় দূষিত প্রাণী এবং স্বাস্থ্য সমস্ত খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব নয় সেখানে টাইফয়েড ঝুঁকি বেশি দেখা যায় যদি টাইফয়েড প্রবন এলাকায় কখনো পরিদর্শন করতে চান তাহলে সেখানকার খাবার এবং পানি পান করা থেকে সাবধানতা অবলম্বন করবেন।
আরো পড়ুনঃ হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাচার উপায়
টাইফয়েড টেস্ট এর নাম
টাইফয়েড জ্বর হলে বিভিন্ন ডাক্তার বিভিন্ন রকম টেস্ট করতে বা পরীক্ষা করতে বলে। এর মধ্যে ব্লাড কালচার নামক রক্ত পরীক্ষাটি সবারই করতে হয়। আপনার পরীক্ষা শেষ হলে যদি রক্তে স্যালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়ার পাওয়া যায় তাহলেই ধারণা করা হবে যে আপনার টাইফয়েড হয়েছে। জ্বর হওয়ার ২ সপ্তাহ পর উইডাল টেস্ট নামে একটি ননস্পেসিফিক ব্লাড টেস্ট করে ট্রাইটার দেখে টাইফয়েড নির্ধারণ করা হয়।
শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা যা বুঝলাম টাইফয়েড জ্বর প্রাণঘাতী নয়। তবে এই জ্বরের সঠিক চিকিৎসা না হলে দেহের গুরুতর ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই কেউ যদি টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ দেখতে পায়, তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে নিরাময় পেতে হবে।আমরা আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে অনেকটা ধারণা দিয়েছি। আশা করি এই পোস্টটার মাধ্যমে আপনারা অনেকে উপকৃত হবেন ।যদি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই এটি আপনাদের প্রিয়জনদের কাছে শেয়ার করে দিবেন যাতে তারাও এই পোষ্টির মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url